মানবিক করিডোর বাংলাদেশকে সংকটের দিকে ঠেলে দেবে

মানবিক করিডোর নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে তা বাংলাদেশকে যুদ্ধাবস্থার দিকে ঠেলে দেবে বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশ ডায়লগ আয়োজিত একটি সেমিনারের বক্তারা।

তারা বলেন, মানবিক করিডোরের সঙ্গে সামরিক বাহিনী জড়িত। জনগণের সরাসরি প্রতিনিধিত্ব করে পার্লামেন্ট, তাই করিডোর জাতীয় সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার নিলে সেটি হবে আত্মঘাতী। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সামরিক পদক্ষেপের দিকে যাওয়া উচিত নয়। মানবিক সহায়তা দেওয়া যেতে পারে, তবে জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা উপেক্ষা করে অন্য দেশের জন্য নিজের দেশকে ঝুঁকিতে ফেলা গ্রহণযোগ্য নয়। করিডোর চালু হলে সামরিক বাহিনী জড়িয়ে পড়বে এবং হামলার আশঙ্কা থাকবে, যা দেশকে যুদ্ধাবস্থায় নিয়ে যেতে পারে।

বুধবার (২৮ মে) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে দ্য বাংলাদেশ ডায়লগ আয়োজিত “On the Diplomatic Front: South Asia and Beyond” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দ্য বাংলাদেশ ডায়লগের পরিচালক সাইফ রুবাব। অতিথি ছিলেন—

  • বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও সাবেক অ্যাম্বাসেডর এম. হুমায়ুন কবির
  • দ্য রোড টু ডেমোক্রেসির এক্সিকিউটিভ এডিটর সাইমুম পারভেজ
  • স্বাধীন সাংবাদিক ও শিক্ষক আসিফ বিন আলী

সেমিনারে মিডিয়া পার্টনার ছিল দৈনিক সময়ের আলো ও সারাবাংলাডটনেট।

এম. হুমায়ুন কবির বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি তিনটি বিষয়ে নির্ভর করেছে—আইডেন্টিটি, নিরাপত্তা ও অর্থনীতি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকলেও নিরাপত্তা বিষয়ে কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সম্মান, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন—এই তিনটি বিষয় একসাথে থাকতে হবে, এবং এজন্য পেশাদার কূটনীতি ও ডিফেন্স পলিসিতে বিনিয়োগ জরুরি।

সাইমুম পারভেজ বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে, কিন্তু তাদের নীতিমালা নিয়ে প্রশ্ন আছে। মানবিক করিডোর দেশের ক্ষতি ছাড়া কিছু নয়, এবং রোহিঙ্গা সমস্যার সামরিক সমাধান গ্রহণযোগ্য নয়। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত।

আসিফ বিন আলী বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে সুসংহত নীতি নেই, অথচ জাতীয় পরিচয়ই আমাদের বড় শক্তি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে, তাই কূটনৈতিকভাবে নীতি প্রণয়ন জরুরি।

Source: সময়ের আলো

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *